সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সফলতায় বাংলাদেশ উন্নয়নের পথ ধরে দারিদ্রের পথ থেকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাজধানীর সেচ ভবনে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) আয়োজিত `Nutrition Sensitive Social Safety Net Program and School Feeding Program' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম) এর সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (সোশ্যাল সেফটি নেট) কর্মসূচী প্রধান রেজাউল করিম এবং সংস্থাটির পুষ্টি বিষয়ক শাখার প্রধান মনিক বেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারটান-এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম (পিপিসি), অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারটান-এবর অবকাঠামো নির্মাণ ও কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প পরিচালক এস এম শিবলী নজির, সভাপতিত্ব করেন বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম (যুগ্ম সচিব)। সেমিনার সঞ্চালনায় ছিলেন বারটান-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাসনীমা মাহ্জাবীন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ঠিক পর থেকে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা এখানে কাজ করে আসছে। ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ এবং ২০১৮ সালের বাংলাদেশ এক নয়, এখন আমরাও ত্রাণ হিসেবে খাদ্য প্রদানকারী (Food Provider) থেকে খাদ্য যোগানে সহায়ক (Food Assistance) ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি। বাংলাদেশে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার সহায়তায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সূচনা করে। এখন বাংলাদেশে ভিজিএফ, ভিডিএফ, দুগ্ধদানকারী মা-দের জন্য ভাতা, বয়স্ক ভাতা, স্কুল ফিডিং প্রভৃতিতে প্রতি বছর ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করছে । বাংলাদেশ এখন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পাশাপাশি (Social Safety) থেকে সামাজিক সুরক্ষা বলয় (Social Secuirity) তৈরির কর্মপরিকল্পনা করছে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার পুষ্টি বিষয়ক শাখার প্রধান মনিক বেন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত ২০২০ সালের মধ্যে পুষ্টি বিষয়ক সূচকগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর প্রভাবগুলো বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্জনে কারিগরী সহায়তা, বিশ্লেষণ ও পরামর্শ প্রদান করছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা। এছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রয়ক্ষমতার গুণগত মানসম্পন্ন পুষ্টি সমৃদ্ধ চাল সরবরাহের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিসহ কারিগরী সহায়তা, বিশ্লেষণ ও পরামর্শ প্রদান করছে এবং এক্ষেত্রে জীবনচক্র পদ্ধতি/ধারা (Life Cycle Approach) অনুসরণ করছি। এছাড়া দেশজুড়ে ভৌগলিকভাবে পুষ্টি সমস্যায় ভুক্তভোগী অঞ্চলে স্কুল ফিডিং-এর পাশাপাশি জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা তৈরিতে সরকারকে সহায়তা করছে। এই নীতিমালা প্রস্তুত হলে শিশুদের স্কুলে প্রস্তুতকৃত খাদ্য সরবরাহ করা হবে পুষ্টি ও পরিচ্ছন্নতার সকল নির্দেশিকা অনুসরণ করে।
বারটান নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বহুল আলোচিত একটি শব্দ। সরকারের বাজেট প্রস্তুতের সময় অত্যন্ত গুরুত্ব পায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৬ লাখ মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধাভোগ করবে। বারটান আয়োজিত সেমিনারে অংশগ্রহণ করায় তিনি প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি বারটান ভবিষ্যতে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করবে।