বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত কোভিড ১৯ প্রতিরোধে খাদ্য ও পরিচ্ছন্নতার ভূমিকা সংক্রান্ত প্রতিবেদন
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান)-এর উদ্যোগে ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে ‘কোভিড ১৯ প্রতিরোধে খাদ্য ও পরিচ্ছন্নতার ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বারটান-এর প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ হাবিবুর রহমান খান, নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব)। সভাপতিত্ব করেন বারটান-এর পরিচালক (যুগ্মসচিব) কাজী আবুল কালাম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়-এর নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড টেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: ওমর ফারুক।
ড. মো: ওমর ফারুক -এর উপস্থাপিত প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘Covid-19: ROLE OF food and hygiene IN PREVENTION AND PROTECTION’
প্রবন্ধে আলোচিত উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিম্নে আলোকপাত করা হলঃ
সংক্রমণ এড়াতে:
*সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অন্তত ২০ সেকেন্ড হাত পরিষ্কার করতে হবে।
*অসুস্থ মানুষ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
*অপরিষ্কার হাতে চোখ ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
*কাঁচা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
*গৃহস্থালির প্রাণীর সংস্পর্শ ও বর্জ্য থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।
করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে
*বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না।
*অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
*হাঁচি কাশি দেয়ার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
*ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
*সার্জিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে।
*ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
*প্রচুর তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
*নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে।
*অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বর্জন করতে হবে।
*পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
*সংক্রমণ এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে।
*মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য
সেমিনারের প্রধান অতিথি মোঃ হাবিবুর রহমান খান, নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), বারটান, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভাস গড়ে তোলার বিষয়ে পরিবার পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিও দিকে জোর দিতে বলেন। পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে ধূমপান-এর মত ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো থেকে বিরত থাকা সম্ভব। বারটান দেশের মানুষের ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভাস বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতিতে এটা প্রতীয়মান যে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
সেমিনার থেকে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো পাওয়া যায়:
ক. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মনোযোগী হতে হবে, এ জন্য সব ধরনের খাদ্য উপাদান সুষমভাবে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
খ. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে, এর অন্যথা হলে দেহ করোনাসহ বিভিন্ন রোগের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হবে।
গ. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
ঘ. নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
ঙ. মানসিক চাপ থেকে বিরত থাকতে হবে, সম্ভব হলে যোগব্যায়াম করতে হবে।
চ. ধূমপান, মাদকসহ আসক্তি সৃষ্টিকারী দ্রব্য থেকে বিরত থাকতে হবে।
ছ. করোনা পরিস্থিতিতে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সর্বোপরি এই সস্তা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিগুলো কেবল কোভিড-১৯ প্রতিরোধেই কাজ করবে না, বরং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সার্বিক উন্নয়ন ঘটিয়ে অন্যান্য রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখবে। কোভিড-১৯ একটি গণআতঙ্ক-এর ও মহামারী। এই গণআতঙ্কের মহামারীর প্রতিকার ভয় নয় জ্ঞান দিয়ে করতে হবে। কোভিড-১৯-কে আমাদের ‘নতুন স্বাভাবিক’ জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে সেটাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে।