শিশুর পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে জাঁকজমক বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত না হয়ে দেশীয় পুষ্টি সম্পন্ন খাবার দেয়ার চর্চা শুরু করতে হবে। সোমবার (১৭/০৬/১৯) রাজধানীর সেচ ভবনে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউিট (বারটান) আয়োজিত Efficacy of Homemade Diet in Management of Severe Acute Malnutrition শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
এগ্রিকালচারাল পলিসি সাপোর্ট ইউনিট (আপসু)-এর সভাকক্ষে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এস.কে রায়। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আপসু-এর পরিচালক (গবেষণা) তাজুল ইসলাম (যুগ্মসচিব), সভাপতিত্ব করেন বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম (যুগ্মসচিব)।
সেমিনারে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিপীড়নে সেখান থেকে পালিয়ে আসা প্রকট অপুষ্টি সমস্যায় (SAM-Severe Acute Malnutritionহ) আক্রান্ত ০৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৬৪৫টি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুর উপর পরিচালিত গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। এই সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের ০৩ মাসব্যাপী ডিম সুজি প্রস্তুত করার উপাদান সরবরাহ করা হয়। তিন মাস পরে দেখা যায় গবেষণা শুরুর আগে তাদের মাথাপিছু প্রায় ৪৫৫ কিলোক্যালরি গ্রহণ করত, সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬১০ কিলোক্যালরি। দৈহিক গড় ওজন ৬.৩১ কেজি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০ কেজির কাছাকাছি।
প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে ড. এস.কে রায় বলেন, প্রত্যেক দেশের প্রয়োজন তার নিজস্ব উৎস থেকে লব্ধ উপাদান দিয়ে অপুষ্টি সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া। বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন শিশুদের জন্য দেশীয় উপাদানে তৈরি ৩৫টি খাদ্য প্রস্তুত প্রণালী তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, অনেক সময় বিজ্ঞাপনে দেখানো হয় এই পানীয় পান করলে শিশু লম্বা হবে। এই দুধ বা পণ্যটি না খাওয়ালে শিশুর শারীরিক মানসিক বৃদ্ধি ঘটবে না। এই ধরনের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। এই ব্যবসায়িক প্রবণতাগুলো নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মনোযোগী হতে হবে।
সেমিনারে জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।