গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানে নাগরিকদের পুষ্টিস্তর উন্নয়নকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করা আছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেচ ভবনে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) আয়োজিত সেমিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) মো: রুহুল আমিন তালুকদার এ কথা বলেন।
সেমিনারে ‘বাংলাদেশের পুষ্টিনীতি ও কার্যক্রমসমূহ (Nutrition Policies & Programmes in Bangladesh)' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মো: রুহুল আমিন তালুকদার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারটান-এর অবকাঠামো নির্মাণ ও কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প পরিচালক এস এম শিবলী নজির (যুগ্মসচিব), সভাপতিত্ব করেন বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম (যুগ্মসচিব)। সেমিনারে কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মো: রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করার পরে প্রণিত ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্রের অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ নিউট্রিশন গঠন করা হয়, ১৯৭৫ সালে গঠন করা হয় জাতীয় পুষ্টি পরিষদ।
রুহুল আমিন যোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার সবসময় পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বান্ধব নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। ২০১৫ সালে প্রণয়ন করা হয় জাতীয় পুষ্টি নীতি যার ভিত্তিতে জাতীয় পুষ্টি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (Sustainable Development Goals)) এর ০২ নং অভীষ্ট সরাসরি পুষ্টি নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট যা বাস্তবায়নে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করছে।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন নিয়ে আমি নিবিড়ভাবে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি ১৯৫৯ সালে সর্বপ্রথম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এই বিষয়ক একটি আইন ছিল। একই সময়ে ভারতেও একটি আইন হয় যা ২০০৫ সাল পর্যন্ত ৩ শতাধিকবার সংশোধিত হয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়নের আগ পর্যন্ত সেই ১৯৫৯ সালের আইনেই কার্যক্রম চলমান ছিল।
রুহুল আমিন বলেন, জাতীয় পুষ্টি মহাপরিকল্পনায় পুষ্টিস্তর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাজ সুনির্ধারিত। তিনি সরকারের পুষ্টি সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন অংশীজনদের পারস্পরিক সমন্বয় ও নিবিড় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এস এম শিবলী নজির বলেন, বারটান পুষ্টি সংক্রান্ত কার্যক্রমের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে চায়। এজন্য আগত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতি বারটানকে তাদের কার্যক্রমে যুক্ত করতে অনুরোধ জানান। সমাপনী বক্তব্যে বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম বলেন, আশা করি সেমিনারে আলোচিত বিষয়গুলো বারটান-এর কর্মকর্তাদের সরকারের পুষ্টি সংক্রান্ত কার্যক্রম ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে সম্ম্যক ধারণা অর্জিত হয়েছে। তিনি সেমিনারে আগত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।