বদ্ধ জলাশয়ে নিয়মিত পানি পরিবর্তন ও তলদেশ পরিষ্কার করা হলে উন্মুক্ত জলাশয়ের মাছের স্বাদ ও গুণাগুণ রক্ষিত হবে। মঙ্গলবার (২১ মে, ১০১৯) রাজধানীর সেচ ভবনে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে মৎস্য খাতের ভূমিকা’ (Importance of Fish for Food and Nutrition Security in Bangladesh) শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলা হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন-এর মনিটরিং স্পেশালিস্ট ড. হাবিবুর রহমান খন্দকার। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারটান-এর নির্বাহী পরিচালক আশ্রাফ উদ্দিন আহমেদ (অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়)। বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম (যুগ্মসচিব) এর সভাপতিত্বে সেমিনারে খাদ্য ও পুষ্টি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বক্তা তার উপস্থাপনায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে মৎস্যখাতের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বছরে মাথাপিছু ২১ কেজি মাছ আহরণ করছে জনগণ যা দেহে আমিষ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি সরবরাহ করছে। রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মাছ। শুধু খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাই নয়, মাছের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বহুবিধ ব্যবহার কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করছে। মোট শ্রমশক্তির ১১ শতাংশ মৎস্যখাতের সঙ্গে জড়িত।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বদ্ধ জলাশয় ও উন্মুক্ত জলাশয়ে চাষ হওয়া মাছের মধ্যে স্বাদের পার্থক্য ও এই ধরনের মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণে কোনো ঝুঁকি রয়েছে কি না সেই বিষয়টি উঠে আসে। ড. হাবিবুর রহমান খন্দকার বলেন, পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়ে চাষ হওয়া মাছের সঙ্গে উন্মুক্ত জলাশয় যেমন খাল বিল বা নদীর মাছের চাষের প্রধান পার্থক্যটা হচ্ছে পানির চলমান প্রবাহ। পুকুরের পানিও যদি নিয়মিত পরিবর্তন করা হয় এবং তলদেশ নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় তাহলে স্বাদের যে পার্থক্য সেটা থাকবে না। এক্ষেত্রে গুড একুয়াকালচার প্র্যাকটিস সর্বত্র প্রচলনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে বারটান পরিচালক কাজী আবুল কালাম বলেন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে বারটান চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০টির মত সেমিনারের আয়োজন করেছে, তবে প্রথমবারের মত মৎস্যখাত নিয়ে করল। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নির্মাণাধীন প্রধান কার্যালয়সহ বারটান-এর ০৭টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে মৎস্য নিয়ে কাজ করার জন্য পুকুর রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে মৎস্য অধিদপ্তর বারটান-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারে।